بـسـم الله الـرحـمٰـن الرحـيْـم

    • রহিম মার্কেট, সানারপাড়
    • সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা
    • রহিম মার্কেট, সানারপাড়
    • সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা

লেখালেখি

blog-banner

গোঁড়ামি ধর্ম্ম নয়

লিখেছেন: দুখু মিয়া

শুধু গুণ্ডামী ভণ্ডামী আর গোঁড়ামি ধর্ম্ম নয়,
এই গোঁড়াদের সর্বশাস্ত্রে শয়তানী চেলা কয়।
এক সে স্রষ্টা সব সৃষ্টির এক সে পরম প্রভু,
একের অধিক স্রষ্টা কোন সে ধর্ম কহে না কভু।
তবু অজ্ঞানে যদি শয়তানে শরিকী স্বত্ব আনে,
তার বিচারক এক সে আল্লা- লিখিত আল-কোরানে।
মানুষ তাহার বিচার করিতে পারে না, নরকে তারে
অথবা স্বর্গে কোন মানুষের শক্তি পাঠাতে পারে?
‘উপদেশ শুধু দিবে অজ্ঞানে’- আল্লার সে হুকুম,
নিষেধ কোরানে- বিধর্মী পরে করিতে কোন জুলুম।
কেন পাপ করে, ভুল পথে যায় মানবজন্ম লয়ে
কেন আসে এই ধরাতে জন্ম-অন্ধ পঙ্গু হয়ে,
কেন কেহ হয় চির-দরিদ্র, কেহ চির-ধনী হয়,
কেন কেউ অভিশপ্ত, কাহারো জীবন শান্তিময়?

কোন শাস্ত্রী বা মৌলানা, বলো, জেনেছে তাহার ভেদ?
গাধার মতন বয়েছে ইহারা শাস্ত্র কোরান বেদ!
জীবনে যে তার ডাকেনি ক, প্রভু ক্ষুধার অন্ন তার
কখনও বন্ধ করেন নি কেন কে করে তার বিচার?
তাঁর সৃষ্টির উদার আকাশ সকলেরে থাকে ঘিরে,
তাঁর বায়ু মসজিদ মন্দিরে সকলের ঘরে ফিরে।
তাঁহার চন্দ্র সূর্য্যের আলো করে না ধর্ম্মভেদ,
সর্বজাতির ঘরে আসে, কই আনে না তো বিচ্ছেদ!
তাঁর মেঘবারি সব ধর্ম্মীর মাঠে ঘাটে ঘরে ঝরে,
তাঁর অগ্নি জল বায়ু বহে সকলের সেবা করে।
তাঁর মৃত্তিকা ফল ফুল দেয় সর্ব্বজাতির মাঠে,
কে করে প্রচার বিদ্বেষ তবু তাঁর এ প্রেমেরে হাটে?
কোনো ‘ওলি’ কোনো দরবেশ যোগী কোনো পয়গম্বর,
অন্য ধর্ম্মে- দেয়নি ক গালি, - কে রাখে তার খবর?
যাহারা গুণ্ডা, ভণ্ড, তারাই ধর্ম্মের আবরণে
স্বার্থের লোভে ক্ষ্যাপাইয়া তোলে অজ্ঞান জনগণে!
জাতিতে জাতিতে ধর্ম্মে ধর্ম্মে বিদ্বেষ এরা আনি
আপনার পেট ভরায়, তখত চায় এরা শয়তানী।
ধর্ম্ম-আন্দোলনের ছদ্মবেশে এরা কুৎসিত,
বলে এরা, হয়ে মন্ত্রী, করিবে স্বধর্ম্মীদের হিত।
এরা জমিদার মহাজন ধনী নওয়াবী খেতাব পায়,
কারো কল্যাণ চাহে না ইহারা, নিজ কল্যাণ চায়।
ধন সম্পদ এত ইহাদের, করেছে কি কভু দান?
আশ্রয় দেয় গরিবে কি কভু এদের ঘর দালান?
ধর্ম্ম জাতির নাম লয়ে এরা বিষ্ক্ত করে দেশ,
এরা বিষ্ক্ত সাপ, ইহাদের মেরে কর সব শেষ।
নাই পরমত-সহিষ্ণুতা সে কভু নহে ধার্ম্মিক,
এরা রাক্ষস-গোষ্ঠী ভীষণ অসুর-দৈত্যাধিক!
উৎপীড়ন যে করে, নাই তার কোন ধর্ম্ম ও জাতি,
জ্যোতির্ম্ময়েরে আড়াল করেছে, এরা আঁধারের সাথী!
মানবে মানবে আনে বিদ্বেষ কলহ ও হানাহানি,
ইহারা দানব, কেড়ে খায় সব মানবের দানাপানি।
এই আক্ষেপ জেনো তাহাদের মৃত্যুর যন্ত্রণা
মরণের আগে হতেছে তাদের দুর্গতি লাঞ্ছনা।
এক সে পরম বিচারক, তার শরিক কেহই নাই,
কাহারে শাস্তি দেন তিনি, দেখো দু’দিন পরে তা, ভাই!
মোরা দরিদ্র কাঙাল নির্য্যাতিত ও সর্ব্বহারা,
মোদের ভ্রান্ত দ্বন্দ্বের পথে নিতে চায় আজ যারা
আনে অশান্তি উৎপাত আর খোঁজে স্বার্থের দাঁও,
কোরানে আল্লা এদেরই কন- ‘শাখা-মৃগ হয়ে যাও’।

কবিতাটি নজরুল ইসলাম ইসলামী কবিতা বই থেকে সংগৃহিত